৭ম শ্রেণীর কর্ম ও জীবনমুখি শিক্ষা এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ১৫তম সপ্তাহ

৭ম শ্রেণীর কর্ম ও জীবনমুখি শিক্ষা এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ১৫তম সপ্তাহ

ঘর সাজানাের জিনিস তৈরির ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা থাকার প্রয়ােজনীয়তা


ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার প্রয়োজনীয়তা

আমরা সবাই কমবেশি ঘর সাজাতে ভালোবাসি। কিন্তু পরিবারের মাসের খোরাক জুগিয়ে, ডাক্তার-বদ্যির ফি আর পানি-বিদ্যুতের বিল মিটিয়ে ঘর সাজানোর নিত্যনতুন অনুষঙ্গ কেনা আসলেই খুব দুরূহ হয়ে পড়ে। অথচ একটু বুদ্ধি খরচ করলে আর কিছুটা সৃজনশীলতার পরিচয় দিলে যৎসামান্য খরচেই নিজেদের বাড়িঘর নান্দনিক রূপে সাজিয়ে নেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই বলতে হয় নিজেদের সুপ্ত সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর কথা। পুরো বিশ্বেই এই নিজেরা করি, ‘ডু ইট ইয়োরসেলফ’ বা সংক্ষেপে ‘ডিআইওয়াই’-এর ধারণা অত্যন্ত জনপ্রিয় ও কার্যকর গৃহসজ্জার ক্ষেত্রে। অবসর সময়ে আমরা অনেকেই শুধু মুঠোফোন, টেলিভিশন, নেটফ্লিক্স, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইত্যাদির মধ্যে ডুবে থেকে অলস সময় পার করি। অথচ শখের কাজ যেগুলো আগে ঘরে ঘরে প্রচলিত ছিল, সেগুলো নিঃসন্দেহে এর থেকে অনেক ভালো আর ঘর সাজানোর অনন্য সব উপকরণ হাজির করে দিতে পারে প্রায় বিনা পয়সায়।

শখের সূচিকর্ম বা কুরুশ কাঁটার কাজের কথাই ধরা যাক না! খুঁজলে আজও আমাদের অনেকের বাড়িতে আলমারির কোণে বা পুরোনো ট্রাংকে মাতামহীর হাতে পরম যত্নে সেলাই করা ভরাট কাজের ফুল, লতা, পাতা, পাখি বা ‘মায়ের দোয়া’ লেখা এক টুকরো ভাঁজ করা কাপড় পাওয়া যাবে। অমূল্য স্মৃতিবিজড়িত এই শিল্পকর্মগুলো ফ্রেমিং করে নিলে একেবারে অসাধারণ সব ওয়ালপিস পেতে পারি আমরা। এই সূচিশিল্পগুলো থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আর সেই সঙ্গে ইন্টারনেটে পাওয়া হাজারো নমুনা দেখে নিজের কল্পনার মিশেলে এমন সূচিকর্ম, ক্রস স্টিচের কাজ, কুরুশ কাঁটার কাজ করে বাঁধিয়ে নিয়ে তা দিয়ে ঘরের সৌন্দর্য অসামান্য রকমের বাড়িয়ে তোলা যায়।


আগের দিনের মতো টি-কোজি, ন্যাপকিন, বালিশ বা কুশনকভার, টেবিলক্লথ ইত্যাদিতেও নিজের হাতের কাজের ছোঁয়া অত্যন্ত সুরুচির পরিচয় দেয়। আবার সৃষ্টিশীল মনকে কাজে লাগালে রংবেরঙের কাগজ দিয়ে ‘কুইলিং’ করা যায়, ধান-ডাল-শর্ষে আঠা দিয়ে বসিয়ে চিত্র তৈরি করা যায়। নিজে আঁকিবুঁকি করা শখের হাঁড়ি, রিকশা পেইন্টিংয়ের আদলে রাঙিয়ে নেওয়া বাক্স, রঙিন মোম বা পুঁতি দিয়ে বানানো শোপিস, কাপড়ের পুতুল—এসবই ঘর সাজানোর অসাধারণ অনুষঙ্গ হয়ে উঠতে পারে। আর ছবি আঁকার শখ থাকলে তো কথাই নেই। তেলরং, জলরং বা মিশ্র মাধ্যমে করা নিজের হাতের চিত্রকর্ম, ক্যালিগ্রাফি বা ভাস্কর্য দিয়ে সাজানো বসার ঘরটি ঘরে-বাইরের সবার মুগ্ধতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আর এতে যে আত্মিক প্রশান্তি বা সন্তুষ্টি পাওয়া যায়, তা লাখ টাকা দিয়ে কেনা দামি দামি শোপিসে কখনোই মিলবে না।

এই সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে ঘর সাজানোর ব্যাপারটিতে শিশুদেরও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তাদের মতামত ও রুচিকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের নিজেদের বানানো অরিগ্যামি (কাগজ ভাঁজ করে বানানো শিল্প), এঁটেল মাটি বা প্লে ডো দিয়ে বানানো নানা রকম শিশুসুলভ জিনিস, লেগো ব্লক দিয়ে গড়া গাড়ি-বাড়ি, এসব দিয়ে তাদের নিজেদের ঘরটি সাজিয়ে-গুছিয়ে নিতে সাহায্য করলে অল্প বয়সেই তাদের মধ্যে গৃহসজ্জার ব্যাপারে সুরুচি আর আগ্রহ তৈরি হবে।


ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা বিকাশের মাধ্যমে তৈরি করতে পারা যায় এরকম বস্তুর তালিকা 


১) প্লাস্টিকের বোতলের ঝাড়বাতি

 

২) প্লাস্টিকের বোতলের মাছের পিঠের মতো ঝাড়বাতি


৩) প্লাস্টিকের বোতলের জুয়েলারি স্ট্যান্ড

 

৪) প্লাস্টিকের বোতলের ফুলেল ল্যাম্প

 

৫) প্লাস্টিকের বোতলের কার্টুন টব

৬) প্লাস্টিকের বোতলের পাতার ঝোলানো ল্যাম্প
 
৭) প্লাস্টিকের বোতলের ফুলদানী

৮) প্লাস্টিকের বোতলের স্বচ্ছ পর্দা


৯) কাপড়ের তৈরি টেব্‌ল ম্যাট

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *