৯ম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ১০ম সপ্তাহ

৯ম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা এ্যাসাইনমেন্ট ১০ম সপ্তাহ

“প্রকৃতি ও বিশ্বজগতের সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা” শিরােনামে তােমার পাঠ্য বইয়ের ভিত্তিতে এবং কুরআন ও সুন্নাহর আলােকে একটি নিবন্ধ রচনা কর। (সর্বোচ্চ ২০০ শব্দ)

৯ম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ১০ম সপ্তাহ

 

“প্রকৃতি ও বিশ্বজগতের সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা” শিরােনামে কুরআন ও সুন্নাহর আলােকে নিবন্ধ

ভূমিকা : মহান আল্লাহ পৃথিবী কে খুব সুন্দর ও সুশৃঙ্খল ভাবে তৈরি করেছেন। ইসলামের সর্বপ্রথম বিষয় আকাইদ। ইসলামের মূল বিষয় গুলোর উপর মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা কে আকাইদ বলা হয়।আকাইদের সব গুলো বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করলে মানুষ ইসলামে প্রবেশ করতে পারে।

তাওহীদের পরিচয়: তাওহীদ শব্দের অর্থ একত্মবাদ। মহান আল্লাহকে এক ও অদ্বিতীয় সত্তা হিসেবে বিশ্বাস করার নামই হলো তাওহীদ। আল্লাহ্’তালা এক। তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ। তিনিই আমাদের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিজিকদাতা। তিনি অনাদি ও অনন্ত। তাঁর সমকক্ষ বা সমতুল্য কিছু নেই। তিনি একমাত্র মাবুদ। সকল প্রশংসা ও ইবাদত একমাত্র তাঁরই প্রাপ্য। মনেপ্রাণে এই বিশ্বাসকে তাওহীদ বা একত্মবাদ বলা হয়।

আল্লাহ তা’আলা বলেন, “কোনো কিছুই তাঁর সদৃস্য নয়” (সূরা আশ-শুরা, আয়াত ১১)। আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রক্ষাকর্তা, রিজিকদাতা, পুরস্কারদাতা, শাস্তিদাতা ও ইবাদাতের এক অদ্বিতীয় সত্তা হিসেবে বিশ্বাস করার নামই হলো তাওহীদ।

সৃষ্টি জগতের বাস্তব উদাহরণ : কত বিশাল এই জগত। আমাদের পৃথিবী এর সামান্য অংশ মাত্র। আমাদের চারপাশের নানা রকম জিনিস দেখতে পাই। সুন্দর সুন্দর ফুল, গাছ পাতা, পশুপাখি ইত্যাদি এছাড়াও রয়েছে নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত, বনজঙ্গল সাগর-মহাসাগর। আরো আছে বিশাল আকাশ ,চন্দ্র সূর্য, বড় বড় গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ, নীহারিকা গ্যালাক্সি এসব কিছুই সৃষ্টি জগতের অন্তর্গত। আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না এমন অনেক বস্তু এই সৃষ্টি জগতে রয়েছে। এগুলো প্রত্যেকটি সুশৃংখলভাবে ঘুরছে। এগুলো সৃষ্টিকর্তা ছাড়া নিজ থেকে সৃষ্টি হয়নি। নিশ্চয় একজন স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন। তিনি হলেন মহান আল্লাহ সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। তাঁর কোন সাহায্যকারী প্রয়োজন হয়নি। তিনি হও ( কুন )বলার সাথে সাথে সবকিছু সৃষ্টি হয়ে যায়। বস্তুত আল্লাহ তায়ালাই এসব কিছুর সৃষ্টি কর্তা ও নিয়ন্তা। মহাজগতের নিয়ম-শৃঙ্খলা তাঁরই দান। পৃথিবীর সকল কিছুর স্রষ্টাও তিনিই। আর পশু পাখি, গাছপালাসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রকও তিনি। তিনিই সবকিছু করেন বরং তিনি যা ইচ্ছে করেন তাই হয়।এসবকিছুতে যদি একের বেশি নিয়ন্তা থাকতো, তবে নানা রকম বিশৃঙ্খলা দেখা দিত। আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, “যদি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে, আল্লাহ ব্যতীত বহু ইলাহ থাকতো তবে উভয় ধ্বংস হয়ে যেত।” (সূরা আল -আম্বিয়া, আয়াত ২২)

মহাজগতের সৃষ্টি কর্তা ও বিধানদাতা যদি একাধিক হতেন, তাহলে মহাজগৎ এত সুশৃংখলভাবে চলতো না। একজন স্রষ্টা চাইতেন সূর্য পূর্ব দিকে উঠুক।আরেকজন চাইতেন পশ্চিম দিকে। আবার অন্যজন দক্ষিণ বা উত্তর দিকে সূর্যকে উদিত করতে চাইতেন। ফলে এক চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিত। এতে আমরা বেশ অসুবিধায় পড়তাম‌। বস্তুত একাধিক স্রষ্টা বা নিয়ন্ত্রক থাকলে বিশ্বজগতের সুন্দর সুশৃংখল অবস্থা বিনষ্ট হয়ে যেত। আল কোরআনের অন্য এক আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, “আর তাঁর(আল্লাহর) সাথে কোন ইলাহ নেই। যদি তা থাকত, তবে প্রত্যেক ইলাহা নিজ নিজ সৃষ্টিকে নিয়ে পৃথক হয়ে যেত এবং একে অপরের উপর প্রাধান্য বিস্তার করত।” ( সূরা আল মু’মিনূন, আয়াত ৯১)

এ আয়াতে ও তাওহীদ একত্ববাদের তাৎপর্য সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। নিচের উদাহরণের মাধ্যমে আমরা তা বুঝতে পারি। একাধিক স্রষ্টা থাকলে তারা তাঁদের সৃষ্টিকে নিয়ে আলাদা হয়ে যেতেন। যেমন আগুনের স্রষ্টা আগুন নিয়ে পৃথক হয়ে পড়তেন। অতঃপর সমস্ত কিছুকে আগুন ধারা দ্বারা জ্বালিয়ে দিয়ে তাঁর নিজ ক্ষমতা প্রদর্শন করতেন। তেমনি মহাসাগর এর স্রষ্টা সারা পৃথিবী তার সৃষ্টি ধারা ডুবিয়ে দিতে চাইতেন। ফলে আমাদের অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে যেত পৃথিবীর সকল কিছুই ধ্বংস হয়ে যেত।

উপসংহার: এসব বর্ণনা এক কথায় প্রমাণ করে যে ইলাহা একমাত্র একজন। আর তিনি হলেন একমাত্র মহান আল্লাহ’তালা। তিনিই সবকিছুর স্রষ্টা, নিয়ন্ত্রক ও পালনকর্তা। তাঁর হুকুমেই সবকিছু নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। কোন সৃষ্টিই এই নিয়মের ব্যতিক্রম হতে পারে না। এসব কাজে তিনি এক ও অদ্বিতীয়। আন্তরিকভাবে এসব বিশ্বাসই তাওহীদ বা একত্ববাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *